৭ অক্টোবর, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার ছয় বছর পূর্ণ হয়েছে। ২০১৯ সালের এই দিনে ছাত্রলীগের নির্যাতনে প্রাণ হারান তিনি। ছয় বছর পার হলেও এখনো শেষ হয়নি এই বহুল আলোচিত মামলার বিচারকার্য।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ।
নিজের পোস্টে ফাইয়াজ লেখেন—“৭ই অক্টোবর, ২০২৫। ৬ বছর হয়ে গেলো ভাইয়ার শহীদ হওয়ার। ৩ বছর পর এবার আম্মু সাথে আছে এসময়ে। ২৬ তারিখে আম্মু বলতেছে আজকে ও বাসায় আসছিল। গত পরশুদিন সম্ভবত ভাইয়ার নটরডেমের একটা ছবি আসছে সামনে, পাশের বাসায় গিয়ে মোবাইলে সেভ করে এনেছে।”
তিনি আরও লিখেছেন—“আজ সন্ধ্যায় এক মিডিয়ার সাথে অনলাইনে কথা বলছি ওই সময়ের ঘটনা নিয়ে, সে পুরো সময় চোখ ভিজিয়ে সামনে বসে বসে শুনলো কী বলছি। আবার সারাদিন বলছে দেখ এ এই ছবি দিছে, ও ওইটা বলছে। আমি বুঝি না, এগুলো দেখে এত কষ্ট পায় তাও কেন দেখে!”
আবরার ফাইয়াজ আরও লিখেছেন,“গত ৬ বছরে আসলে অনেক কথাই বলেছি। কিন্তু যার জন্য এত কিছু, সেই বিচার এখনো সম্পন্ন হলো না। ৬ বছর কি যথেষ্ট না? ‘Justice delayed, Justice denied.’”
তিনি উল্লেখ করেন,“গত কয়েকমাসে এই মামলার যে রাজনীতীকরণ শুরু হয়েছে তা দেখে ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা জাগে স্বাভাবিকভাবেই। ৬ মাস আগে হাইকোর্টের রায় হয়েছে, অথচ আপিল বিভাগে শুনানি এখনো শুরু হয়নি।”
পোস্টের শেষে আবরারের ভাই লেখেন,“বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এখন শুধু চাই—আপনারা থাকতেই বিচারের অবশিষ্ট ধাপগুলো শেষ করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন। পুরো দেশের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় আছে। আর অবশ্যই আজকে ভাইয়ার জন্য দোয়া করবেন।”
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেন আবরার ফাহাদকে।
মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।
তবে এখনো আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয়নি, ফলে বিচারপ্রক্রিয়া ঝুলে আছে দীর্ঘদিন ধরে।