কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার হুমাইপুর-পাটুলী নৌরুটে চলছে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি। স্থানীয় মাঝিদের অভিযোগ, পাটুলী ঘাটে প্রতিদিন ৬০০ টাকা করে চাঁদা না দিলে যাত্রী পারাপারের নৌকাগুলোকে ঘাটে ভিড়তে দেওয়া হয় না। নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার পরও বুধবার (৮ অক্টোবর) ঘাটে নৌকা ভেড়ালে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির ১০টি নৌকা আটকে দেন বলে অভিযোগ ওঠে।
ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত মাঝিরা বাজিতপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। এতে চরম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় নৌচালকরা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পাটুলী ঘাট এলাকায় সারি করে বেঁধে রাখা হয়েছে অন্তত ১০টি যাত্রীবাহী নৌকা। মাঝিরা জানান, আগে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা দিতে হতো। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে হঠাৎই তা বেড়ে ৬০০ টাকা করা হয়েছে।
হুমাইপুর গ্রামের মাঝি জাহাঙ্গীর (৩৪) বলেন,
“আমরা নিয়ম করে টাকা দেই। তারপরও বুধবার সকালে যাত্রীসহ ঘাটে গেলে বলে—চাঁদা দেন নাই, তাই নৌকা উঠতে পারবেন না। আমরা কষ্টে খাই, এই সময় নৌকা বন্ধ মানে পেট বন্ধ।”
আরেক মাঝি আক্কাস আলী (৪০) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“নৌকা চালিয়েই সংসার চলে। বর্ষায় যা আয় হয়, তাই দিয়েই সারাবছর টিকে থাকি। এখন নৌকা আটকায়া রাখছে, বসে আছি খালি পেটে।”
মাঝিরা বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে এখন তারা ঘাটে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, চাঁদাবাজির এই দৌরাত্ম্যের কারণে যাত্রী চলাচলও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে পারাপারের জন্য বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে, যা আরও ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।