স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের অনেকেই বাইরে খাবার না খেয়ে ঘরেই রান্না করা খাবার খেতে পছন্দ করেন। তবে রকমারি পদ বা প্রসেসড ফুড রান্নার সময় তেলের ব্যবহার হয়ে থাকে বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত তেল ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলেও কম তেলে রান্না করলে তা শরীরের জন্য নানা উপকার বয়ে আনে।
তেল বেশি হলে কী হয়?
অলিভ ওয়েল, সরিষার তেল, চিনাবাদামের তেল কিংবা সয়াবিন তেল—সব ধরনের তেলই অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে ভাজা খাবারে তেল ভেসে উঠলে তা দেখতে আকর্ষণীয় হলেও এতে অপ্রয়োজনীয় চর্বি জমে, যা হৃদপিণ্ডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
২০১৬ সালের ইন্ডিয়ান হার্ট জার্নালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বারবার ব্যবহৃত পরিশোধিত তেল ট্রান্সফ্যাট ও ফ্রি র্যাডিকেলের মতো ক্ষতিকর উপাদানে রূপ নিতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
কম তেলে রান্নার স্বাস্থ্য উপকারিতা
✅ ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
পুষ্টি বিশেষজ্ঞ শ্রুতি কে ভরদ্বাজের মতে, তেলে প্রচুর ক্যালোরি থাকে। তাই কম তেলে রান্না করলে ক্যালোরি গ্রহণ কমে যায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে এই অভ্যাস অত্যন্ত কার্যকর।
✅ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার হৃদপিণ্ডের ক্ষতি করে। অন্যদিকে কম তেলে রান্না করা খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে।
✅ রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওমেগা–৬ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ তেলের অতিরিক্ত ব্যবহার ইনসুলিন প্রতিরোধের ঝুঁকি বাড়ায়। কম তেলে রান্না করা খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
✅ হজমশক্তি উন্নত করে
তেল বেশি হলে বদহজম ও পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দেয়। কম তেলে রান্না করলে খাবার সহজে হজম হয় এবং শাকসবজি ও প্রোটিন গ্রহণে আগ্রহ বাড়ে।
✅ পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকে
অতিরিক্ত তেল খাবারের ভিটামিন ও খনিজ নষ্ট করতে পারে। বিপরীতে কম তেল ব্যবহার করলে উপাদানের আসল পুষ্টিগুণ বজায় থাকে, যা শরীরের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে।
পরামর্শ
সুস্থ থাকতে প্রতিদিনের রান্নায় কম তেল ব্যবহার করুন।
একই তেল বারবার ভাজার জন্য ব্যবহার না করাই উত্তম।
প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর তেল যেমন—অলিভ ওয়েল বা সরিষার তেল অল্প পরিমাণে ব্যবহার করলে তা শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে।